বাংলাদেশের প্রচলিত অনেক প্রথার মধ্যে মেয়ের বাবার গলার কাটা হয়ে আজও ঝুলে আছে ইফতারের প্রথা। রমজান আসলেই তার ২-৩ মাস আগে থেকে পিতা-মাতার চিন্তা করতে হয়- কি করে মেয়ের স্বামীর বাড়িতে ইফতার পাঠানোর টাকা জোগার করতে হবে। অনেক বাবা ইফতারের এই আয়োজনের জন্য নিজের গরু ছাগল এমনকি হাস মোরগও বিক্রি করেন। সুদে টাকা এনে তা মেটাতে বছর পার করেছেন অনেকেই।
বাংলাদেশে ইফতার কু-প্রথা পুরাতন এক ঐতিহ্য। বাবার বাড়ি থেকে রমজানে মেয়ের বাড়িতে ইফতার পাঠানো হয় ।
সে ইফতার শুধু মেয়ের বাড়ির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকেনা। ছেলের শ্বশুড়বাড়ি থেকে যেদিন ইফতার আসবে সেদিন বন্ধুবান্ধ আর আত্মীস্বজনকে দাওয়াত দেওয়া হয়। সেই সাথে একটি নিরব প্রতিযোগিতা চলে- কার শ্বশুরবাড়ি থেকে কত বেশী আইটেমের ইফতার এলো, কে তার শ্বশুরবাড়ির ইফতার কয়শত মানুষকে দাওয়াত দিয়ে খাওয়াল।
যার শ্বশুরবাড়ী থেকে যত বেশী ইফতার আসে তার তত সুনাম। তেমনি যে মেয়ের বাবার সে সক্ষমতা কম, তিনি ইফতারি দিয়ে খুশি করতে না পারলে- অনেক ক্ষেত্রে কুটু কথা শুনতে হয়। এই বছর করোনা সংকটের কারণে প্রথম দিকে এই ইফতার পাঠানো থেকে নিস্তার মিললেও। দোকানপাঠ খোলায় অনেকেই ইফতারের পাঠিয়েছেন। তবে গণপরিবহন বন্ধ থাকায় এবং করোনা সংক্রমণের ভয় থাকায় তা খুবই নগণ্য। করোনা এক্ষেত্রে আশীর্বাদ হয়ে এসেছে।
যুগ যুগ ধরে চলে আসা এই প্রথার অবসান চায় বাংলাদেশের নতুন প্রজন্ম। নতুন প্রজন্ম একে জুলুম হিসেবে দেখছে। নীরবে কাদছে হাজারও পরিবার।
নতুন প্রজন্মের দাবি আধুনিক এই যুগে ইফতার প্রথার বিলুপ্তি ।