জীবনটাই,
কখনো নির্মমতায় ভরা, কখনো সুখের ফাল্গুণধারা। কখনো কষ্টের মেঘে ছেয়ে যাওয়া আকাশ। আবার কখনো আনন্দের সীমাহীন নীলাম্বর।জীবনটা কতকিছুর বেড়াজালে আবদ্ধ। সত্য-মিথ্যা, প্রেম-প্রতারণা, আনন্দ-হতাশা, পাওয়া না পাওয়া, সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না, ঘাম-শ্রম-লড়াই, উত্থান-পতন, কত কী!
লিখছিলাম নবীগঞ্জ উপজেলাধীন কাজিগঞ্জ বাজারের ছোট একটি চায়ের দোকানের বয় ১২ বছরের ছোট ছেলে রিমনের কথা রিমন হোসেন, পিতাঃজুলহাস মিয়া একজন অটোচালক, রিমনের জন্মস্থান নবীগঞ্জের মিল্লিক গ্রামে বর্তমান ঠিকানা কাজিগঞ্জ বাজার,যে এখন স্কুলের ব্যাগ কাধে বহন করে বিদ্যালয়ে যাওয়ার কথা,স্কুল থেকে বাড়ি ফিরে মা,বাবার পরম আদর স্নেহ ভালোবাসাময় জীবনে লালিত হওয়ার কথা,রোজ বিকেলে মাঠে খেলাধুলা হৈই হুল্লোড় করে সময় কাঠিয়ে দেওয়ার কথা, সে এখন চায়ের দোকানের বয়, ভ্যাগের কি নির্মমতা,অভাবের সংসার অভাব অনটন দুর করতেই এই বয়সে বাজারে বেড়িয়ে পড়া,ভাগ্য তাকে চায়ের দোকানের বয় বানিয়ে দিলো,হয়তোবা তার মধ্যে অনেক প্রতিভা রয়েছে কিন্তু সঠিক পরিচর্যার জন্য তা বিকশিত হচ্ছে না।কিছুদিন আগে সে “যদি রাত পোহালে শোনা যেত বজ্ঞবন্ধু মরে নাই”শেখ মুজিবুর রহমান কে নিয়ে সে যে গানটি গাইতেছিলো সেই গান যারা শুনেছেন তাদের অবশ্যই তার প্রতিভা সম্পূর্কে ধারণা হয়ে গেছে, এই গানটি কয়েক মাস আগে সামাজিক যোগাযোগ ফেইচবুকে ভাইরাল হয় সেখানে ১০ লাখ ভিউ হয়,ইতোমধ্যে মেইড ইন বাংলাদেশ পেইজে তার আরেকটি গান পোস্ট হতে দেখা যায়, রিমনের এই গানটি স্থানীয় ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি সাঈদ আজমলের ধারণকৃত ভিডিও, মেইড ইন বাংলাদেশ এর পরিচালক শিল্পী ইমরান হোসেন কে পাঠানো হয়,রিমনের গানের কন্ঠ ভালো লাগায় তিনি মেইড ইন বাংলাদেশ পেইজে পোস্ট করেন।তিনি সেই ইমরান হোসেন ছোট ছোট গ্রাম অঞ্চলের প্রতিভাগুলোকে বড় বড় স্টার বানিয়েছেন,যার হাত ধরে বদলে গেছে অনেক অবহেলিত গ্রাম গ্রামান্তর এর ছোট শিল্পীর জীবন। ক্ষুদে শিল্পীদের ভাগ্য পরিবর্তনে ইমরান হোসেনের অবদান অপরসীম। মেইড ইন বাংলাদেশ এর পৃষ্ঠপোষক ইমরান হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে রিমনের জন্য এবং তার যে প্রতিভা রয়েছে তা বিকশিত করতে চেষ্টা করবেন বলে তিনি জানান।
রিমনরা নিরন্তর ছুটে চলছে এই মানবজীবনে।তার মত কেউ কষ্টে হোঁচট খেয়ে পড়ে থাকে, কেউ অসীম সাহসীকতায় উঠে দাঁড়ায় দৃঢ়চিত্তে ইমরান হোসেন এর মানুষের সান্নিধ্যে । এই ‘উঠে দাঁড়ানো’ মানুষরাই জীবন বাস্তবতার কাছে পরাজিত হয় না। এরাই পা বাড়ায় অসীমে। কোন দানবীয় শক্তি এদের পথরোধ করতে পারে না। এরা লক্ষ্যে অটল, অবিচল, এরা নজরুলের বিদ্রোহী শক্তি, ফররুখ আহমদের সাত সাগরের মাঝি। এরা নির্ভীক, অকুতোভয়। এরা জীবনযুদ্ধে কখনোই হার মানে না। এরাই খাঁটি মানুষ। সাফল্য আর শ্রদ্ধা এদেরই অলংকার।
প্রকৃতপক্ষে, মানুষের সারাজীবনই একটা যুদ্ধক্ষেত্র। আল্লাহ্ প্রতিনিয়তই মানুষকে নিত্য-নতুন পরীক্ষায় ফেলেন। যারা টিকে যায় তারাই চিনিয়ে আনে বিজয়। কাল-মহাকাল এদের স্মরণ করে মমচিত্তে।